--"এ ভাই, হয়েছে তোর কাজ আজকের? ঘড়ি তে দেখেছিস কটা বাজে?" অভ্রের হেডসেটে একটা তীব্র কন্ঠে আওয়াজ আসল। --"হ্যাঁ রে, আর কিছুক্ষণ। আমি আসছি।" অভ্র উত্তর দিল। "তোর এই কিছুক্ষণ শেষ হতে হতে অফিস ফাঁকা হয়ে গেছে, রাস্তা খালি হতে চলেছে আর দোকান গুলো এবার বন্ধ হচ্ছে। একটু বলবি বাবা, তোর এই "কিছুক্ষণের" মেয়াদ কত?" --"কিছুক্ষণ"। ১ ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করতে করতে জ্যোতির ধৈর্য দেয়ালে ঠেকা খেয়েছে। --"তোকে আমি অফিসে ঢুকে কেলিয়ে আসব বলে দিচ্ছি ছাগল কোথা কার।" অভ্রের উত্তর শুনে জ্যোতি চটে গেছে। ওইদিকে অভ্র নিজের কাজ গুটিয়ে অফিস থেকে বেড়াল আর মোবাইলে একটা গল্প পড়া শুরু করল। মোবাইল দেখতে দেখতে অভ্র লক্ষ্য করেনি কি ও রাস্তার মাঝামাঝি এসে দাড়িয়ে পড়েছে। একটা বাইক সামনে এসে ব্রেক না কসলে অভ্র বাজে ভাবে ধাক্কা খেত। --"ও দাদা! ব্রেক চাপলেন কেন? ঠুকে দিতে হত।" জ্যোতি চেঁচিয়ে বলল কিন্তু লোকটা ততক্ষণে বেড়িয়ে গেছে। কাচুমাচু মুখ করে অভ্র সামনে দাড়াল। --"তুই কোন দিন এই মোবাইল দেখার চক্করে নরক দেখে ফেলবি, আমি বলে দিলাম। কি দেখিস মোবাইলে এত, হ্যাঁ? দেখা তো দেখি।" অভ্র চট করে মোবাইল পকেটে রেখে দিল। জ্যোতি কটমট করে ওর দিকে তাকাল। --"আচ্ছা এই নে।" অভ্র মোবাইল বের করে ওকে দিল। --"গুড বয়।" জ্যোতি মোবাইল নিল। অভ্রের মোবাইলে কোন লক প্যাটর্ন নেই। অনেকে বলে যার মোবাইলে লক নেই সে আজকের সময় সবচেয়ে পরিষ্কার লোক। --"এটা তুই কত হাজার বার পড়ে নিয়েছিস বল তো?" জ্যোতি মোবাইল ফেরত দিয়ে জিজ্ঞাসা করল। --"গুনে গুনে কেউ আবার পড়ে নাকি!" নিজের চা আর সিগারেট নিয়ে বসল অভ্র। জ্যোতি আর কোনো কথা বাড়াল না। সিগারেটের ধোঁয়া হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে অভ্র ঠান্ডা হাওয়া টা অনুভব করছে। --"দ্যা ফেমস অভ্র বয়। সবার ঝামেলা সর্ট আউট করে নিজের জিনিস গুলো ধোঁয়ায় উড়িয়ে দিচ্ছে।" অভ্র কথাটা শুনে হেঁসে উঠল। --"৭ মাস তো হয় গেল ভাই। এখনও তুই সেখানেই আছিস?" জ্যোতির কোনো কথার উত্তর দিল না অভ্র। একটা শেষ করে আরেকটা ধরাল। ঘড়ি তে সময় দেখে জ্যোতি বলল ওকে বেড়াতে হবে। --"শোন, টাকা দিতে হবে না। আমি দিয়ে দিয়েছি। আর একটু তাতারি বাড়ি যা।" অভ্র মাথা নেড়ে নিজের বন্ধু কে বিদায় দিল। ©Ananta Dasgupta #anantadasgupta #bengalistory #Part1