আয়না প্রত্যেক দিনের মত তৈরি হয়েছে অফিসের জন্য কিন্তু তার মন লেগে আছে মোবাইলের দিকে। কারোর অপেক্ষায় বোধহয়। কিন্তু সমস্যা এইটা কি নিজের ব্যাকুলতা কাউকে বলতে পারবে না সে। সমস্যার একটা খুব সুন্দর নাম রেখেছিল হিমানী- "আমার অসহ্য" ছেলেটার সাথে তার পরিচয় হয় কয়েক মাস আগে। হিমানী যে ফ্লোরে কাজ করে তার দুটো ফ্লোর পরেই ছেলেটার অফিস। প্রায় লিফটে দেখা হতো। দেখা পরিনত হয় কথা বার্তায় আর তারপর বন্ধুত্ব। অদ্ভুত এক বন্ধু। আয়নার জীবনে এসে সবকিছু যেন হঠাৎ করে পালটে দিল। আয়না আর ও প্রায় অনেকটা একে অপরের ব্যপারে জেনে গেছিল। ছেলেটা ওকে যত জালাত তত মনে হয় হিমানীর সারা জীবনে কেউ করেনি। কিন্তু ছেলেটার কোনো কথা ফেলত না সে। একদিকে তো দিব্যি সব ভালো চলছে ওর সাথে কিন্তু আরেক দিকে একটা ভয়। যে আয়নার জীবনে আসে সে তাকে ঠিক সেই সময় ছেড়ে চলে যায় যখন আয়নার সেই মানুষটাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই কথাটা ছেলেটি জানত কিন্তু আয়নার মধ্যে থেকে সে এই এত বছরের চাপা ভয় কি ভাবে বের করবে বুঝতে পারত না। এইদিকে আয়না ও হুটহাট করে ছেলেটার ওপরে রেগে গিয়ে অনেক ভুলভাল কথা শুনিয়ে দিত কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ছেলেটা অভিমান করলেও আয়নার হাত ছাড়েনি। কিছু মাস পর ছেলেটা বুঝতে পারে সে আয়না কে পছন্দ করে। ঠিক ততটাই যতটা একটা মানুষের মনের মধ্যে জায়গা থাকা দরকার। প্রথমে ছেলেটা মানতে চায়নি কেননা এত কম সময়ের মধ্যে এত একটা গভীর অনুভূতি হওয়া খুব অযুক্তিকর একটা কথা। কিন্তু এই অযুক্তিকর ব্যপারটা ছেলেটার সাথে ঘটে। আয়না এইটা জানত না কিন্তু সে যেই জিনিস গুলি অনুভব করত সেটা কখনও করেনি। আয়না প্রায় ছেলেটার হাত ধরে অফিসের গার্ডেন এরিয়া তে ঘুরত। যেহেতু রাতের সময় সেখানে কেউ যায়না তো ওরা ওখানেই অনেকক্ষণ আড্ডা দিত। ছেলেটার হাত রাখতেই আয়না একটু অন্য রকম অনুভব করত। একদিন কথা বলতে বলতে প্রায় কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে দেয়, আলাদা একটা শান্তি। তা ছাড়া ছেলেটার সাথে কথা বলার একটা অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়। একদিন ছেলেটা এই কথাটা আয়না কে জানায় তখন আয়না কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বলে --"বুঝলাম বেদান্ত কিন্তু তুমি সবটাই জানো এইজন্য এই সব ভেব না।" বেদান্ত তারপর আর কখনও কথাটা তোলেনি কিন্তু ওর মনে হতো হয়তো আয়না ইচ্ছা করে কিছু চেপে রেখেছে যেটা বাইরে আসা খুব দরকার না হলে আয়না মধ্যে গুমরে থাকবে। একদিন হঠাৎ আয়না দেখে বেদান্ত তার সামনে থেকে অন্য এক মেয়ের সাথে বেড়িয়ে গেল। জিনিসটা বেদান্ত ইচ্ছাকৃত করেনি কিন্তু আয়নার খারাপ লেগেছে। ©Ananta Dasgupta #bengalistory #FiveMinutes #anantadasgupta